৩৩তম আন্তর্জাতিক ও ২৬তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন কর্তৃক মিরপুরস্থ সুবর্ণ ভবনের মাঠে আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলার আয়োজন করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুইড বাংলাদেশের মহাসচিব মো মাহবুবুল মুনির। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সুইড বাংলাদেশের স্নায়ুবিকাশ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন। মেলায় সুইড বাংলাদেশের স্টলে হস্তশিল্প সামগ্রী ও প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক গ্রন্থ প্রদর্শন ও বিক্রয় করা হচ্ছে। মেলা চলবে ৫ ডিসেম্বর মধ্য রাত পর্যন্ত এদিন সুইড বাংলাদেশের শিক্ষার্থী শিল্পীগণ মনোজ্ঞ ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করবে।
৩৩তম আন্তর্জাতিক ও ২৬তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে সুইড বাংলাদেশের উদ্যোগে ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় বকুলমামুন মাল্টিপারপাস এরিনা, সুইড ভবন (৭ম তলা), ঢাকায় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গিফট বক্স বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুইড বাংলাদেশের ১ম যুগ্মমহাসচিব ইমেলদা হোসেন দীপা। বিশেষ অতিথি ছিলেন সুইড বাংলাদেশের ২য় যুগ্মসচিব আবুল কাশেম সানি এবং প্রচার সচিব বকুল চন্দ্র মহন্ত। সভাপতিত্ব করেন সুইড বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সচিব রাশিদা জেসমীন রোজী।
আলোচক আফ্রিদি আমিন চৌধুরীর বলেন, আজকের এই দিনটি আমাদের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য অত্যন্ত আনন্দঘন একটি দিন। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও এই দিনটিকে নানাবিধ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়। এই দিনে আমরা পৃথিবীর মানুষকে জানিয়ে দিতে চাই যে, আমরাও অসাধ্যকে সাধন করতে পারি। অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে বিকশিত নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে প্রতিবন্ধী জনগণ।
অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ, বিকশিত নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে প্রতিবন্ধী জনগণ এই প্রতিপাদ্য বিষয়ের সাথে সহমত পোষণ করে বক্তব্য শুরু করে করেন প্রধান আলোচক মোহাম্মদ তারেকুল আলম খন্দকার । তিনি বলেন, আশা রাখছি আমার কথাগুলো আপনারা মনযোগ সহকারে শুনবেন এবং সকলের কাছে আমার পক্ষ থেকে পৌঁছে দিবেন। ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ মানুষের জীবনের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন দেশে বসবাস করছি। সমতা, মানব মর্যাদা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠাই হলো স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
তিনি আরাও বলেন, অত্যন্ত দুঃখের ও পরিতাপের বিষয় হলো এই যে, দেশ স্বাধীন হয়েছে প্রায় ৫৩ বছর হলো। এই ৫৩ বছরে এই কথাগুলি বইয়ের পাতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, আর আমরা যেখানে ছিলাম প্রায় সেখানেই পড়ে আছি। সামান্য কিছু কাজ হলেও সেটার বাস্তবায়ন খুবই ধীর লয়ে হচ্ছে। যেটা আমরা প্রত্যাশা করি না।প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য ২০১৩ সালে যদিও ২টি আইন আমাদের দেশে প্রণিত হয়েছে কিন্তু তার যথার্থ প্রয়োগ এখনও হচ্ছে না। আমরা প্রতিনিয়তই বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। যদিও কিছু দিন আগে বৈষম্যের অবসানের জন্য দেশে আন্দোলন হলো, জীবন দিল অনেক ছাত্র-জনতা। এই আন্দোলনের ফলে হয়তো সকলের জীবনের উন্নয়ন ঘটতে পারে কিন্তু আমরা যে আগের অবস্থানেই রয়ে যাবো তার প্রমাণ ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছি। বিগত ৩ মাসে সকলের যৌক্তিক দাবীগুলো মানা হচ্ছে। আমাদের দাবীগুলো মানার নমুনা এখনো দৃশ্যমান হচ্ছে না। তবে যেহেতু মানুষ আশায় বুক বাধে সেক্ষেত্রে আমরাও আশা করছি আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বর্তমান সরকার।
অনুষ্ঠানে আরও স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুইড ল্যাবরেটরী মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিম্মি সামাদ, সুইড উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. ইয়াকুব আলী, সুইড ভকেশনাল ট্রেনিং স্কুলের শিক্ষক মো. শাহাদাৎ হোসেন এবং সুইড বিশেষ শিক্ষা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজের প্রভাষক আনোয়ার হোসেন। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুইড বাংলাদেশ প্রশাসনিক বিভাগের অফিস সহায়ক স্নায়ুবিকাশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি মোহাম্মদ তারেকুল আলম খন্দকার হীরক। আলোচনা করেন সুইড ভকেশনাল ট্রেনিং স্কুলের শিক্ষার্থী আফ্রিদি আমিন চৌধুরী । প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুইড বাংলাদেশের ১ম যুগ্মমহাসচিব ইমেলদা হোসেন দীপা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুইড বাংলাদেশের ২য় যুগ্মসচিব আবুল কাশেম সানি এবং প্রচার সচিব বকুল চন্দ্র মহন্ত। অনুষ্ঠান উদ্বোধন এবং সভাপতির ভাষণ প্রদান করেন সুইড বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সচিব জনাব রাশিদা জেসমিন রোজী।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন সুইড উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল, সুইড ল্যাবরেটরী মডেল স্কুল এবং সুইড ভকেশনাল ট্রেনিং স্কুলের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
শিক্ষার্থীদের মাঝে গিফ্ট বক্স উপহার প্রদান করেন প্রধান অতিথি ইমেলদা হোসেন দীপা। বিশেষ অতিথি আবুল কাশেম সানি, প্রচার সচিব বকুল চন্দ্র মহন্ত এবং সভাপতি রাশিদা জেসমীন রোজী। এখানে উল্লেখ্য যে, অপারেশন জেনারেশন এর সৌজন্যে প্রাপ্ত গিফ্ট বক্স সমূহ প্রধান অতিথি ইমেলদা হোসেন দীপার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন রতু সংগ্রহ করে সুইড বাংলাদেশে প্রেরণ করেছেন।