আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার প্রধান আসামি ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। আদালত একইসঙ্গে শেখ হাসিনা আগে যত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন তা সব মাধ্যম থেকে সরাতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
তথ্য সচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি সচিব ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ আদেশ এখন থেকেই বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম, প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ ও আবদুল্লাহ আল নোমান।
শুনানিতে গাজী এম এইচ তামিম বলেন, শেখ হাসিনা গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার পলাতক আসামি। তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তিনি পলাতক থাকা অবস্থায় বিদেশে বসে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলার ভিকটিম ও সাক্ষীরা ভয়ভীতির মধ্যে রয়েছে। এতে বিঘ্ন হচ্ছে তদন্তকাজ। এ সময় শেখ হাসিনার দুটি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন প্রসিকিউটর তামিম। একটি বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, এখন যারা বেশি বাড়াবাড়ি করছে তারা ভাল থাকবে না। ডিসেম্বর পর্যন্ত দেখ। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমার বিরুদ্ধে তো ২২৭টি মার্ডার কেস হয়েছে। ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়েছি। এক মামলায় যে শাস্তুি, ২২৭ জনের মামলায়ও একই শাস্তি। এবার এলে আর ডেভেলপ করব না। করব সংস্কার। এ ধরনের বক্তব্য আন্তর্জাতিক আইনেরও পরিপন্থি।
এ পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল জানতে চান, এসব বক্তব্য শেখ হাসিনার কি না? তখন প্রসিকিউটর বলেন, অনেক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার এই বক্তব্য এসেছে। ভিডিও রেকর্ডও আছে। পরে ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার সব ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
এর আগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়।