চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক জিয়াংসু সিনহুয়ার অধীন সংবাদমাধ্যম ও প্রকাশনা সংস্থা চায়না পপুলেশনি নিউজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার নির্দেশ দিয়েছে, দেশের বার্ষিক জন্মহার বৃদ্ধি এবং বিয়ে, প্রেম, সন্তান জন্মদান, পরিবার গঠন প্রভৃতি ইস্যুতে তরুণ প্রজন্মের মনে ইতিবাচক মনোভাব ফিরিয়ে আনতে বিশ্ববিদ্যালয়গ ‘লাভ এডুকেশন’ চালু করতে।
প্রতিবেদনটিতে সরকারকে উদ্বৃত করে বলা হয়েছে, “কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমে লাভ এডুকেশনকে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এই এডুকেশনের আওতায় যে কোর্সগুলো পড়ানো হবে, সেগুলোর প্রধান এবং একমাত্র লক্ষ্য থাকবে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বিয়ে এবং দাম্পত্য প্রেম সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব ফিরিয়ে আনা।”
মূলত স্নাতক শিক্ষার্থীদের জন্য চালু করতে বলা হয়েছে এই কোর্স। চায়ানা নিউজ পাবলিকেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলেজের জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনসংখ্যা এবং চীনের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন প্রেম-বিয়ে এবং সন্তান জন্মদান জরুরি— এ বিষয়ে ধারণা প্রদান করতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।
আর জ্যেষ্ঠ বা স্নাতক শিক্ষার্থীদের নিয়মিত কেসস্টাডি বিশ্লেষণ, গ্রুপ ডিসকাশন এবং নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ও বন্ধুত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।
“আমরা দেশজুড়ে একটি স্বাস্থ্যকর এবং ইতিবাচক বিয়ে ও সন্তানজন্মদান সংস্কৃতি গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়েছি। সেই লক্ষ্যেরই একটি অংশ এই লাভ এডুকেশন”, বলা হয়েছে চায়না নিউজ পাবলিকেশনের প্রতিবেদনে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ বেশ কয়েক দশক ধরে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ ছিল চীন। বর্তমানে দেশটির মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটি এবং এখনও চীন বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য গত শতকের সত্তরের দশকে ‘এক সন্তান নীতি’ চালু করেছিল ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার। কিন্তু ২০০০ সালের পর থেকে চীনের জন্মহার কমতে থাকা এবং বয়স্ক লোকজনের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ২০১৫ সালে এই নীতি বাতিল করে বেইজিং।
তবে এতে লাভ তেমন হয়নি। এক সন্তান নীতি বাতিলের পরও নিম্ন জন্মহার অব্যাহত থাকে চীনে এবং বর্তমানে এটি বেইজিংয়ের জন্য রীতিমতো দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। কারণ ২০২২ এবং ২০২৩— পর পর দু’ বছর নিম্ন জন্মহারের রেকর্ড করেছে চীন।