আমাদের দেশে অনেক দোকানেই লেখা থাকে ‘বিক্রীত পণ্য ফেরত নেওয়া হয় না’। লেখা না থাকলেও অলিখিতভাবে এই নিয়মটি থাকেই যে, বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর কোনো পণ্য আর বিক্রতা ফেরত নেবেন না। ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন হওয়ার পর ওই ক্রয়-বিক্রয় বাতিল হয়ে যাওয়ার মতো উপযুক্ত কারণ না পাওয়া গেলে (যেমন পণ্যের দোষ-ত্রুটি বের হওয়া ইত্যাদি) বিক্রীত পণ্য ফেরত না নেওয়ার বা ওই ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিটি বাতিল না করার পূর্ণ অধিকার বিক্রেতার আছেও বটে।
এরপরও বিক্রেতা যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিক্রীত পণ্য ফেরত নেয়, তাহলে আল্লাহ তাআলার কাছে এই উদারতার জন্য সে পুরস্কৃত হবে। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
مَنْ أَقَالَ مُسْلِمًا أَقَالَهُ اللَّهُ عَثْرَتَهُ
যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের অনুরোধে তার সাথে সম্পাদিত ক্রয়-বিক্রয়ের চুক্তি বাতিল করবে আল্লাহ তার গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৩৪৬০)
আর যদি পণ্যের কোনো দোষ-ত্রুটি বের হয় যা ক্রেতার কাছে গোপন ছিল, তাহলে ক্রেতা বিক্রীত পণ্য ফিরিয়ে দিতে পারে এবং বিক্রেতার অবশ্যকর্তব্য ওই ক্রয়-বিক্রয় বাতিল করে বিক্রীত পণ্য ফেরত নেওয়া।
আজকাল অনেক বিক্রেতাই ভালো পণ্যের সঙ্গে ত্রুটিযুক্ত কিংবা নিম্নমানের পণ্য মিশিয়ে বা পণ্যের দোষ গোপন করে বিক্রি করে থাকে যেমন পণ্য ব্যবহারের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর তা পরিবর্তন করে নতুন মেয়াদকালের ছাপ মেরে দেওয়া ইত্যাদি। ইসলামে এ রকম বেচাকেনা হারাম। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ وَلَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ بَاعَ مِنْ أَخِيهِ بَيْعًا فِيهِ عَيْبٌ إِلَّا بَيَّنَهُ لَهُ
এক মুসলমান অন্য মুসলমানের ভাই। একজন মুসলমানের জন্য তার ভাইয়ের কাছে কোনো ত্রুটিপূর্ণ পণ্য বিক্রি করা বৈধ নয় যদি সে পণ্যের ত্রুটি ক্রেতাকে যথাযথভাবে জানিয়ে না দেয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২২৪৬)